السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ
বাবার চোখ রাঙানো, মায়ের শাষন, বড় ভাইদের পিটুনি ও বড় বোনদের আদর। সব মিলিয়ে এক বৈচিত্রময় জিবন কাহিনী। আমি ছাত্র হিসাবে ছোট বেলায় ভালই ছিলাম। ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত রোল নং সব সময় ১ ছিল।যখন আমি ক্লাস ফাইভে বৃত্তি না পেলাম, তখন আমাকে আবার ক্লাস ফাইভে রাখা হলো। আমি মানষিক ভাবে ধাক্কা খাই, আমার বন্ধু-বান্ধব সবাই হাইস্কুলে পড়বে আর আমি প্রাইমারিতে থেকে যাবো। ফলে আমি লেখা পড়ায় অমনোযোগী হই এবং দ্বিতীয় বার ফাইভে আমি রেজাল্ট আরো খারাপ করি। এই অমনোযোগীতায় আমার কেটে গেলো আরো দুটি বছর। আমি যখন ক্লাস এইট এ উঠি, পূর্বের রেজাল্ট স্বরনে আমি বিঃশ্মিত হই। আমি একদিন বাবাকে বললাম আপনি আমাকে প্রতিদিন পড়া দিবেন এবং পড়া আদায় করে নিবেন। বাবা আমাকে বললো তুইকি এখনো ছোট আছিস যে, তোকে পড়া ধরতে হবে। আমি জীবন গঠনে আরেক বার ধাক্কা খেলাম। তারপরও হাল ছাড়ি নাই, নিজেই পড়া-শোনা শুরু করলাম, ধীরে ধীরে আমার রেজাল্ট আবারো ভালো হতে থাকলো । এস এস সি তে এসে আমরা পরিক্ষা দিয়ে ছিলাম ৬৪ জন, পাশ করে ছিলাম মাত্র ৭ জন, তার মধ্যে আমি ২য় হয়েছিলাম।
একটি কথা না বললেই নয়- আমি প্রথম বার এস এস সি পরিক্ষা দিয়ে ছিলাম সাধারন বিভাগ থেকে ও ২য় বার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে । তারপর আলিম, ফাজিল, কামিল, ডিপ্লোমা ও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ন করি। আমি কখনো নকল করতাম না, এমনকি নকলের বিরুদ্ধে ছিলাম সৌচ্চার। যখন আমি এইস এস সি ( আলিম) প্রথম বার পরিক্ষা দিচ্ছিলাম, তখন আমি প্রথম পরিক্ষা দিতে গিয়ে দেখি কিছুটা নকল চলে। আমি বিষয়টা উপজেলা নির্ভাহী অফিসার (ইওনো) স্যারকে জানাই। স্যার পরিক্ষায় নকল প্রতিরোধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেন। এখানে বলা বাহুল্লো, যখন আমি প্রথম পরিক্ষা দিয়ে বাড়িতে আসি, তখন আমি জামা-কাপড় খুলতেই দেখি আমার সাড়া শরীরে পক্স হয়েছে । আমি অবশ্য আগের দিন থেকে হালকা জ্বর উপলব্দি করছিলাম । কিন্তু পরিক্ষার নেষায় সেটাকে তোয়াক্কা করছিলাম না । আমার বন্ধু-বান্ধব বলছিল তোর পরিক্ষা দেয়ার দরকার নাই । কিন্তু আমার কনফিডেন্সের কথা তাদের বলি না । আমি প্রচন্ড অসুস্থতায়ও পরিক্ষা দিতে বিরত হই নাই । আল্লাহর রহমতে ভালো রেজাল্ট করেছিলাম । আলহামদুলিল্লাহ !
এই পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষ জন্ম গ্রহন করে, সাথে জন্ম হয় তার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নই মানুষ দেখে তার নিজের মত । আমি গ্রামের ছেলে, আামার বেড়ে ওঠা গ্রামের সবুজ শেমল ছায়া ঘেরা এক ছোট্ট গ্রামে। গ্রামটির নাম মস্তালীপুর। এটি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অবস্থিত। এটি চাটমোহর শহর থেকে ৮ কিঃমিঃ দুরে অবস্থিত। এই ছোট্ট গ্রামটি থেকেই আমার বুকের মাঝে গড়ে উঠতে থাকে ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন থেকেই এতো দুর আসা। আমি কখনোই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম না, কারন আমি ইনজেকশন নিতে খুব ভয় পেতাম। আমি সব সময় ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম এবং যখন আমি ক্লাস সিক্সে মাদ্রাসায় ভর্তি হলাম তখন থেকে মাওলানা হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করেছেন। আমিন।
আমি খুব ছোট্ট কাল থেকেই নামাজ পড়তাম, নিয়মিত মসজিদে যেতাম, আমার নামাজ ক্বাজা হতো না বললেই চলে। হঠাৎ এক দিন আমি নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলাম, আমার বড় ভাই আমাকে বললো, এই কাজটা করে নামাজে যা, আমি বললাম সময় নাই নামাজ থেকে এসে করবো । আমাকে নামাজে যেতে দিলো না। তখন আমি ক্লাস ৩য় শ্রেণীতে পড়ি। আমি রাগ করে নামাজ আদায় করা থেকে বিরতি থাকি। পরের দিন আমি মক্তবে যাই, মক্তবের হুজুর সবাইকে নামাজের কথা জিজ্ঞাসা করে কিন্তু আমাকে জিজ্ঞাসা করে না। কারন হুজুর জানে আমি কখনো নামাজ কামাই করি না । কিন্তু আমার ইমিডিয়েট বড় বোন হুজুরকে বলে দেয়। তারপর হুজুর আমাকে বেত্রাঘাত করে এবং নামাজের জন্য উপদেশ দেয় । সেই থেকে আমি কখনো নামাজ কামাই দেই না। তবে, কখনো কখনো আমার নামাজ ক্বাজা পরে। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। আমিন !